এই ভালোবাসার শেষ কোথায়?
সপ্তম পর্ব (৭ম পর্ব)
কিন্তু সময় যত যাচ্ছে মেয়েটার চিন্তা ততই বাড়ছে। মেয়েটার চিন্তার কারণ তার এইচএসসি পরীক্ষা। আসলে পরীক্ষার থেকেও বড় চিন্তা তার বিয়ে নিয়ে। কেননা তার পরিবার বলে রেখেছে পরীক্ষা শেষ হলে তাকে বিয়ে দিয়ে দেবে। এজন্য সময় যত এগুচ্ছে মেয়েটার চিন্তা তত বাড়ছে।
এদিকে ছেলেটার সাথে মেয়েটার খুব ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তারা একে অপরের সবসময় খোঁজ খবর নেয়। তাদের খুব ভালো ভাবেই সময় অতিবাহিত হচ্ছে।
এপ্রিল মাস
মেয়েটার পরীক্ষা শুরু হয়ে যায়। পরীক্ষা দিয়ে এসে ছেলেটার সাথে কথা বলে, সবসময় কেমন আনমনা হয়ে থাকে।
ছেলেঃ কী ব্যাপার! ইদানীং দেখছি কেমন অন্যমনস্ক থাকো, কী হয়েছে?
মেয়েঃ কই কী হবে! কিছু না।
ছেলেঃ কিছু তো হয়েছেই। আমাকে বলা যাবে না?
মেয়েঃ আসলে তুমি তো সব-ই জানো, আমার পরীক্ষা শেষ হলে আমাকে বিয়ে দিয়ে দেবে। আমি এখন বিয়ে করতে চাই না। কিন্তু কী করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। ছেলে দেখা শুরু করে দিছে ভালো কাউকে পেলেই বিয়ে দেবে।
ছেলেঃ আরে এটা তো খুব ভালো কথা৷ বিয়ে তো একদিন করতেই হবে, তাইনা?
মেয়েঃ হ্যাঁ, কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি না।
ছেলেঃ এতো টেনশন করছো কেন, যেটা করতে হবে সেটা আগেভাগেই করা ভালো। দাওয়াত দিও আমায়
মেয়েঃ যাও তো, আমি আছি আমার চিন্তায়। আর উনি আছে বিয়ের দাওয়াত নিয়ে। এখন বাই পরে কথা হবে।
ছেলেঃ ওকে বাই
দেখতে দেখতে মেয়েটার পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলো। আর যেই কথা সেই কাজ ইতোমধ্যে পরিবার থেকে বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরমধ্যে কয়েকজন ছেলে পক্ষ মেয়েকে দেখেও গেছে। কিন্তু এখনো পাকা কথা হয় নি কারো সাথে।
আজ সোমবার, আগামী শুক্রবার আরেক ছেলে পক্ষ মেয়েকে দেখতে আসবে। এমন-ই কথা সে শুনতে পেলো, বাসার সবাই বলাবলি করছিলো। সে একথা শুনা মাত্রই ছেলেটা কে কল করে...
মেয়েঃ হ্যালো
ছেলেঃ হুম, কী খবর?
মেয়েঃ আর খবর, আগামী শুক্রবার আবার একজন আসবে দেখতে।
ছেলেঃ কী!! ওয়াও এতো দারুণ খবর। দোয়া করি তাদের যেন পছন্দ হয়ে যায়। অনেকদিন কারো বিয়ের দাওয়াত খাই না।।
মেয়েঃ এইবার বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে বলে দিলাম। (মেয়েটা রেগে রেগে বললো)
ছেলেঃ আরে রাগ করছো কেন? আচ্ছা শুনো, তুমি তো এখন কারো সাথে রিলেশন করো না। আর কোনো পছন্দের মানুষও নেই। তাহলে বিয়ে করতে সমস্যা কী!
মেয়েঃ না... তা ঠিক নেই (আমতাআমতা কণ্ঠে)
ছেলেঃ না না না,, কেমন যেন সন্দেহ হচ্ছে। কেউ আছে নাকি পছন্দের? আমাকে বলবে না?
মেয়েঃ ওই গাধা, আমার পছন্দের কেউ থাকলে আগে তুমি জানতে। আজ পর্যন্ত কোনো কথা কী তোমার থেকে লুকিয়েছি? সব কথা-ই তো আগে তোমার সাথে শেয়ার করি।
ছেলেঃ হ্যাঁ তা তো বলো। কিন্তু মনে হচ্ছে তুমি কিছু একটা আমার থেকে লোকাচ্ছ।
মেয়েঃ আরে কী লুকাবো, কিছু না। তুমি দোয়া করো শুক্রবারে যেন ছেলে পক্ষ আমাকে পছন্দ না করে।
ছেলেঃ অপছন্দ করার মতো মেয়ে নাকি তুমি? আমি হলে তো দেখতে গিয়েই বিয়ে করে নিতাম।
মেয়েঃ তাই না! এতো শখ বিয়ে করার?
ছেলেঃ হ্যাঁ বয়স তো আর কম হলো না, বিয়ে তো করতেই হবে। দেখি, ভালো মেয়ে পেলে তাড়াতাড়ি করে ফেলবো।
মেয়েঃ সত্যি!! তা কেমন মেয়ে পছন্দ? আমার মতো নিশ্চয়!
ছেলেঃ ধুর! তোমার মতো হতে যাবে কেন। আমার তো শান্ত, নম্র, সুশীল, সুন্দরী একটা বউ চাই।
মেয়েঃ ওহ তার মানে আমি শান্ত, নম্র, সুশীল, সুন্দরী নই? ভালো দোয়া করি একটা ডাইনির সাথে তোমার বিয়ে হোক।
ছেলেঃ ডাইনি! সে তো তুমি। আর আমি সারাজীবন বিয়ে না করে থাকলেও তোমার মতো ডাইনি কে বিয়ে করবো না।
মেয়েঃ হুহ, আমি তো বসে আছি তোমাকে বিয়ে করার জন্য। আচ্ছা রাখছি, পরে কথা হবে।
ছেলেঃ ওকে, শুক্রবার ভালো করে সাজুগুজু করো। তাহলে বিয়ে পাক্কা।
মেয়েঃ ধুর....বাই।
আজ শুক্রবার।
সকাল দুপুর বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলো, মেয়েটার কোনো খোঁজ নেই। অনলাইনে আসে না আবার কল ও করছে না। কী হলো ওর, কিছুই তো জানতে পারলাম না। (ছেলেটা মনে মনে এসব ভাবছে)
ছেলেটা না পেরে কল করে....রিসিভ করতেই কান্নার শব্দ। (চলবে)
~ মোঃ শাহারুখ হোসেন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন