এই ভালোবাসার শেষ কোথায়?
৫ম পর্ব
মেয়েঃ ও আমার সাথে চিট করেছে, আমাকে ঠকিয়েছে।। আমার সাথে এতো দিন মিথ্যে প্রেমের অভিনয় করেছে।
ছেলেঃ হুম ঘটনা তাহলে এখানে! তা আপনি কীভাবে জানলেন?
মেয়েঃ আমি এতোদিন একটুও বুঝতে পারিনি যে ও আমার সাথে টাইম পাস করে যাচ্ছে। ওকে কতোবার রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দিতে বলেছি কিন্তু ও কিছুতেই রাজি হয় নি। আমাকে নানাভাবে বুঝিয়ে এই কথা এড়িয়ে গেছে। আর আমাকে এ-ও বলেছিলো আমি যেন ওর কোনো পোস্ট এ কমেন্ট না করি। আমিও ওর কথা শুনে চুপ ছিলাম।
ছেলেঃ হ্যাঁ তারপর কী হলো?
মেয়েঃ তারপর সেদিন রাতে মানে যেই রাতে আমি সুইসাইড এটেন্ড করেছিলাম সেই রাতে আমি ওর ছবিতে কিছু না ভেবেই কমেন্ট করি "আমার জান'টাকে সেই লাগছে" ও তখন অনলাইনে ছিলো না।
ছেলেঃ আপনাকে না কমেন্ট করতে নিষেধ করেছিলো?
মেয়েঃ হ্যাঁ নিষেধ করেছিলো, কিন্তু আমি ওইদিন এমনিতেই ইচ্ছা করে কমেন্ট করেছিলাম। তবে এই কমেন্ট করাতে যে এতো কিছু হবে কখনো ভাবতেই পারিনি।
ছেলেঃ এতো কিছু কী!
মেয়েঃ কমেন্ট করার প্রায় ২০ মিনিট পর আমার ইনবক্সে একটা মেসেজ রিকুয়েষ্ট আসে। আমি দেখলাম শান্তা নামের একটা মেয়ে এবং আমাকে লিখেছে 'কে আপনি'?
আমি ভাবলাম আজব তো আমাকে আগে মেসেজ দিয়ে আমাকেই জিজ্ঞাসা করছে কে আমি?
একটু হাসলাম তারপর রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট করে রিপ্লাই করলাম।
ছেলেঃ তারপর, তারপর কী হলো?
মেয়েঃ আম্মু ডাকছে, পরে এসে বলবো; এখন বাই
কিছুক্ষণ পর মেয়েটা আবার অনলাইনে আসে। এসেই ছেলেটাকে মেসেজ দেয়।
মেয়েঃ ওই হ্যালো, কী করেন?
ছেলেঃ কিছু না, আপনার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। বলুন এবার....
মেয়েঃ তারপর সেই মেয়েটাকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম আপনি কে? বললে ওই মেয়েটা (শান্তা) রিপ্লাই দিলো আমি যেই হই সেটা পরে জানবেন। আগে বলেন 'সোহাগ' আপনার কী হয়?
আমি তো রীতিমতো শুনে অবাক এই মেয়ে আবার কে! সোহাগ কে কীভাবে চেনে আর আমাকেই বা কেন মেসেজ দিলো। অনেক প্রশ্ন মাথার ভিতর ঘুরপাক খাচ্ছিলো।
ছেলেঃ হ্যাঁ সেটাই স্বাভাবিক। তারপর?
মেয়েঃ তারপর আমি সোজাসাপটা বলে দিলাম সোহাগ আমার বয়ফ্রেন্ড। মেয়েটা এই মেসেজ দেখে সাথে সাথে মেসেঞ্জারে কল দিলো। আমি রিসিভ করতেই আমাকে বললো, আপনি কবে থেকে সোহাগের গার্লফ্রেন্ড? সোহাগের গার্লফ্রেন্ড তো আমি। এ কথা শুনে তো আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার উপক্রম হলো। আমি বললাম এটা অসম্ভব, ও অন্য কোনো মেয়ের সাথে কথাই বলে না আর গার্লফ্রেন্ড তো অনেক পরের কথা। মেয়েটা (শান্তা) বললো, আপু আপনাকে কী বলবো ওর সাথে আমার প্রায় দুই বছরের সম্পর্ক। আমাদের সম্পর্ক অনেক গভীরে কী আর বলবো! ও আমাকে বিয়ে করবে বলছে ২ বছরের মধ্যে। আমি তার কথা বিশ্বাস করতে চাইলাম না।
তখন মেয়েটা বললো আপু ও আমাদের দুজনের সাথেই চিট করেছে, ঠকিয়েছে৷ আপনি তো আমার কথা বিশ্বাস করছেন না, ওয়েট আপনাকে প্রমাণ দিচ্ছি।
ছেলেঃ তারপর, কী প্রমাণ দিছিলো?
মেয়েঃ তারপর মেয়েটা (শান্তা) তাদের কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি দিলো, তাদের মেসেঞ্জারের সব কথোপকথন এর স্ক্রিনশট দিলো। আমি ওগুলো দেখে হতবাক হয়ে যায়। কী বলবো, কী করবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। মেয়েটা (শান্তা) আবার মেসেজ দিলো, এবার বিশ্বাস হয়েছে? আমি বললাম "হ্যাঁ" কিন্তু ও এমনটা কীভাবে করতে পারলো। আমার মাথায় কাজ করছে না, কাকে ভালো বাসলাম! কার সাথে সারাজীবন কাটানোর স্বপ্ন দেখছিলাম! আমি কান্না শুরু করলাম। মেয়েটাও (শান্তা) কাঁদতে কাঁদতে বললো আমাদের দুজনের সাথে এমন করেছে এর জবাব ওকে দিতেই হবে। তারপর কল কেটে দেয়।
ছেলেঃ কী সাংঘাতিক ঘটনা। দেখলেন তো আপনার ভদ্র, শান্ত, নম্র ছেলের আসল চেহারা?
মেয়েঃ সত্যিই কাউকে এতো সহজে চেনা যায় না। আমি ওকে এতো অল্পতে বিশ্বাস করে ভুল করেছি।
ছেলেঃ তারপর কী করলেন?
মেয়েঃ তারপর রাতে ও অনলাইনে আসে, এসেই আমাকে কল দেয়। কল রিসিভ করতেই বলছে, স্মৃতি তুমি ওর কথা বিশ্বাস করো না। ওর সাথে আমার কিছুই নেই। ও তোমাকে যা বলেছে সব মিথ্যা সব বানিয়ে বানিয়ে বলেছে। আমি চুপ করে শুধু শুনছি আর বুঝলাম যে ওই মেয়েটা (শান্তা) এতোক্ষণে ওকে সব বলেছে আর ওদের মাঝে হয়তো অনেক কিছু হয়েছে।
এরপর সোহাগ বলছে, কী হলো কথা বলো না কেন? আমাকে বিশ্বাস করো আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি। আমি ওর কথা শুনে হতবাক হচ্ছি কীভাবে একটা মানুষ এতোটা মিথ্যুক, প্রতারক হতে পারে। এখনো অনবরত মিথ্যা বলেই চলেছে। আমি তখন বললাম, শান্তার সঙ্গে তোমার কিছু নেই? বললো, না নেই। আমি বললাম এগুলো কী? তাই বলে ইনবক্সে সেই ছবিগুলো পাঠালাম। ও ছবিগুলো দেখার পরও অস্বীকার করেই চললো। বলছে এই ছবিগুলো এডিট করা। ওর সাথে আমার কোনো সম্পর্কই নেই। "মিথ্যার একটা লিমিট থাকে"-আমি বললাম।
তারপর বললো স্মৃতি আমি তোমাকে সব খুলে বলছি। আসলে ও আমার ক্লাসমেট, আমরা ভালো বন্ধু ছিলাম। এ ছাড়া কিছুই না....ছিঃ সোহাগ ছিঃ এখনো মিথ্যা বলছো। আমার ঘেন্না হচ্ছে তোমার সাথে কথা বলতে। বলে আমি কলটা কেটে দেয়।
ছেলেঃ তারপর কী করলেন?
মেয়েঃ তারপর ও আমাকে অনেকবার কল দিলো আমি কেটে কেটে দিচ্ছিলাম। এরপর রিসিভ করলাম।। হ্যাঁ সমস্যা কী??? (চলবে)
~ মোঃ শাহারুখ হোসেন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন